আ.লীগ একাত্তরকে নিজেদের সম্পত্তি বানিয়েছে: শিবির সভাপতি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, একাত্তর আমাদের জাতীয় ইতিহাস ও গৌরবের অংশ। এই অহংকার কারও ব্যক্তিগত বা দলীয় সম্পত্তি নয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ একাত্তরকে নিজেদের একান্ত সম্পত্তি বানিয়েছিল। তারা এই চেতনাকে রাজনৈতিক শিল্পে পরিণত করেছে।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে রংপুরের কারমাইকেল কলেজের শহীদ মিনার চত্বরে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির রংপুর মহানগর শাখার আয়োজনে নবীনবরণ ও বিভাগীয় মেধাবীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পতন অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। আজকে আওয়ামী লীগকে অতীতের সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, যারা পাকিস্তানের বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, তাদের স্বপ্ন ছিল ন্যায়ভিত্তিক, বৈষম্যহীন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার। কিন্তু স্বাধীনতার পর যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন, তারা পাকিস্তানের শাসকদের চেয়েও বড় স্বৈরশাসকে পরিণত হয়েছেন। তাই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে সুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতি বহুদিন অচল ছিল। আলহামদুলিল্লাহ, এখন তা কাটতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা আশা করি, ধাপে ধাপে দেশের অন্য ক্যাম্পাসেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ছাত্র সংসদগুলোতে শিক্ষার্থীরা ন্যায়, সততা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিনিধিকে নির্বাচনে জয়যুক্ত করেছে।

তিনি বলেন, একাত্তরের শহীদদের ত্যাগকে যথাযথ মর্যাদায় রেখে আমাদের চব্বিশের প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি ন্যায়ভিত্তিক ও কল্যাণমুখী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। পুরোনো, ফ্যাসিবাদী ও একচেটিয়া রাজনীতির দিন শেষ। যারা এখনো সেই ধারা বজায় রাখতে চায়, ব্যর্থতার দায় তাদের নিতে হবে।

শিবির সভাপতি বলেন, ৫ আগস্টের পর আমরা দেখেছি, শিক্ষাঙ্গনে এক ধরনের পরিবর্তনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও চায় তাদের ক্যাম্পাসে ফ্যাসিবাদমুক্ত, অংশগ্রহণমূলক এবং আদর্শভিত্তিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা হোক। এই দাবির প্রেক্ষিতেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রসংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ নিচ্ছে, যা ইতিবাচক দৃষ্টান্ত।

তিনি বলেন, আমরা সবসময়ই আলোচনা, সংস্কার ও আইনি ভিত্তির পক্ষে। প্রশাসন যদি ছাত্রশিবিরের সহযোগিতা চায়, আমরা অবশ্যই দায়িত্বশীলভাবে সহযোগিতা করব, ইনশাআল্লাহ। তবে এই প্রক্রিয়াটি যেন স্বচ্ছ ও আইনসম্মতভাবে সম্পন্ন হয়, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।

কারমাইকেল কলেজ সভাপতি আবু সুফিয়ানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রংপুর মহানগর শিবিরের সভাপতি নুরুল হুদা।

এ সময় নবীনবরণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক আরমান পাটোয়ারী, শিবিরের কারমাইকেল কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *